কৃত্রিম সার সংকট তৈরির অভিযোগ

NGN NEWS

কৃষির জেলা নওগাঁয় ১ লাখ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা

মোঃ কামরুল হাসান,নওগাঁ প্রতিনিধি :

উত্তরের সীমান্তবর্তী কৃষি নির্ভর জেলা নওগাঁর মাঠে-মাঠে এখন চলছে বোরো ধানের চারা রোপণের উৎসব চলছে। জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন ও রোপন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে , চলতি বোরো মওসুমে জেলায় ১ লাখ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে বোরো মৌসুমের শুরুতেই সারের সংকট তৈরির অভিযোগ উঠেছে। কৃষকরা জানান, সরবরাহ কমার অজুহাতে সব ধরনের সারের বস্তাপ্রতি আড়াইশ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ী ও ডিলাররা। তবে কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস কৃষি বিভাগের।

 

সূত্র মতে, উপজেলা ভিত্তিক বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ও রোপণের পরিমাণ হচ্ছে- নওগাঁ সদর উপজেলায় লক্ষমাত্রা ১৯,৩৬৫ হেক্টর, রোপণ হয়েছে ১০,১০০ হেক্টর। রাণীনগর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ১৮,৮৪০ হেক্টর রোপণ হয়েছে ১৩,৪৫৫ হেক্টর। আত্রাই উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ১৮,৭৯০ হেক্টর, রোপণ হয়েছে ১৬,৩৭৫ হেক্টর। বদলগাছি উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ১২,৭৪০ হৈক্টর। রোপণ হয়েছে ১৫৪০ হেক্টর। মহাদেবপুর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ২৮,৪১০ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ৩,৬৬০ হেক্টর। পত্নীতলা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ২০,৭০০ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ১৮০০ হেক্টর। ধামইরহাট উপজেলায় লক্ষমাত্রা ১৮৭২৫ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ২৬২৫ হেক্টর। সাপাহার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ৬,২১০ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ২৫৯০ হেক্টর। পোরশা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ৮,১১০ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ১,৩৫০ হেক্টর। মান্দা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ৮,১১০ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ৪,৫২০ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ২০,৯৯৫ হেক্টর। এ জেলায় কৃষকরা মূলতঃ জিরাশাইল, ব্রিধান-২৮, ব্রিধান-২৯, ব্রিধান- ৮১, ব্রিধান-৮৯,, ব্রিধান- ৯২ এবং কাটারীভোগ চাষ করে থাকেন।

বরেন্দ্র এলাকার মাঠ জুড়ে ধান রোপণে ব্যস্ত কৃষক। রোপণের শুরুতেই জমিতে সার প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে সার কিনতে গিয়ে নাজেহাল চাষিরা। তাদের অভিযোগ, সরবরাহ কমার অজুহাতে সব ধরনের সারের বস্তাপ্রতি আড়াইশ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ী ও ডিলাররা। এতে বেড়ে গেছে খরচ।

জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এসব জমি চাষাবাদে সারের প্রয়োজন ৭৫ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে মাসিক অনুপাতে ডিলার পর্যায়ে এসব সার সরবরাহ করা হয়েছে। সরকার প্রতিকেজি এমওপি সারের দাম ২০ টাকা, ইউরিয়া ২৭ টাকা এবং টিএসপির ২৭ টাকা বেঁধে দিয়েছে।

জেলার মাঠ পর্যায়ে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগ উঠেছে। সারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। একাধিক খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, ডিলাররা পর্যাপ্ত পরিমাণে সার সরবরাহ করছেন না। সরবরাহ ঘাটতির অজুহাত দিচ্ছেন।

রাণীনগর উপজেলার কৃষক শহিদুল ইসলাম, বদলগাছীর উপজেলার কৃষক আব্দুস ছাত্তার, মান্দা উপজেলার কৃষক রহিম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন কৃষকরা জানান, সার ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে সব ধরনের সারের বস্তাপ্রতি আড়াইশ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে এতে করে উৎপাদন খরচও বেড়ে যাবে আমাদের।

এদিকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ২০৭ জন ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ১২৭ জন নিবন্ধিত ডিলার নওগাঁয় সার সরবরাহের কাজ করছেন। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত জেলায় ৭৬ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া, ডিএপি ও এমওপি সারের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

নওগাঁ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, কিছু অসাধু খুচরা ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। যার দোষ পড়ছে ডিলার ও অন্যান্য ব্যবসায়ীদের উপর।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নওগাঁর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকার নির্ধারিত দামেই বাজারে সার বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা আমরা অবশ্যই গ্রহণ করবো।

Latest Trending>>>>>

SEE MORE  On X >>>>

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *