চোখের শুষ্কতা কেন বাড়ছে, করণীয় কী?
লেখা: অধ্যাপক ডা. সৈয়দ এ কে আজাদ
আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৫, ১৪:৩৪
আজকাল চোখের শুষ্কতা বা ড্রাই আই সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ করে, যারা দীর্ঘ সময় কম্পিউটার, টিভি বা মুঠোফোন ব্যবহার করেন, তাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া, এসি বা ফ্যানের সরাসরি বাতাস, ঘরের কম আর্দ্রতা এবং বায়ুদূষণও ড্রাই আইয়ের অন্যতম কারণ। কিছু রোগ যেমন ডায়াবেটিস, সিজোগ্রেন সিনড্রোম ও অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস চোখের শুষ্কতা বাড়াতে পারে। পাশাপাশি, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ও অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ গ্রহণের ফলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থা ও মেনোপজ-পরবর্তী সময়ে নারীদের মধ্যে চোখের শুষ্কতার আশঙ্কা আরও বেশি থাকে।
কীভাবে বুঝবেন?
চোখে কাঁটার মতো লাগা, কিছু বিঁধে থাকার অনুভূতি এবং অতিরিক্ত পানি পড়া চোখের শুষ্কতার প্রাথমিক লক্ষণ। এতে মাথাব্যথা, নাকবন্ধ হওয়া এবং জ্বরের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, পর্যাপ্ত লালা না থাকা কিংবা কথা জড়িয়ে যাওয়ার সমস্যাও হতে পারে।
চিকিৎসা কী?
চিকিৎসক প্রথমেই চোখের পানির গুণগত মান, পরিমাণ ও গঠনের কিছু পরীক্ষা করবেন। ভিটামিন ‘এ’-এর ব্যবহার এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে চোখের শুষ্কতা দূর করা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কৃত্রিম চোখের পানি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া, মিথাইল সেলুলোজ, সফট কন্ট্যাক্ট লেন্স বা প্যারোটিভ ডাক্ট প্রতিস্থাপনও চিকিৎসার অংশ হতে পারে।
ঘরোয়া প্রতিকার
- প্রচুর পানি পান করা
- নিয়মিত চোখের ব্যায়াম করা
- খাদ্যতালিকায় ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার রাখা
- একটানা তাকিয়ে না থাকা, মিনিটে ১৫-৩০ বার চোখের পাতা পিটপিট করা
- ২০ মিনিট পরপর মনিটর থেকে চোখ সরানো
- কম্পিউটারে কাজের সময় আই প্রোটেক্টর স্পেকটিক্যাল ব্যবহার করা
- বাইরে গেলে মানসম্মত রোদচশমা পরা
- হালকা গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে চোখের ওপরে পাঁচ মিনিট রাখা
- পরিষ্কার তুলায় নারকেল তেল দিয়ে চোখের ওপর ১৫ মিনিট রাখা
- টিস্যুতে অ্যালোভেরা জেল নিয়ে চোখের নিচের পাতায় আলতোভাবে মালিশ করা
চোখের শুষ্কতা প্রতিরোধ ও সঠিকভাবে যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে চোখকে সুস্থ রাখা সম্ভব। যদি সমস্যাটি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।