বাংলাদেশের ৫.৮ ট্রিলিয়ন ডলার পাওনা আটকে রেখে ধনী দেশগুলোর ঋণের ফাঁদ!”

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, ধনী ও দূষণকারী দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের ৫.৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওনা রয়েছে। তবে এই অর্থ পরিশোধের বদলে উন্নয়নের নামে বাংলাদেশকে প্রায় ৭৮ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণের ফাঁদে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বিদেশি ঋণ প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। শিল্পোন্নত দেশগুলোর কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, যা বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের প্রায় ১৭ শতাংশ ভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে তলিয়ে যেতে পারে। এর ফলে প্রায় ২ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অথচ ধনী ও দূষণকারী দেশগুলো এই ক্ষতির জন্য দায়ী হলেও তারা তাদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধ করছে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বের ৫৪টি নিম্ন আয়ের দেশ বিদেশি ঋণের ফাঁদে আটকা পড়েছে। এসব দেশ জাতীয় উন্নয়ন বিসর্জন দিয়ে ধনী দেশগুলোর কাছে ১৩৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, জলবায়ু দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর কাছে ধনী দেশগুলোর ঋণের পরিমাণ ১০৭ ট্রিলিয়ন ডলার, যা তাদের ১.৪৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণের তুলনায় ৭০ গুণ বেশি।

অ্যাকশনএইডের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ধনী দেশ, বেসরকারি ঋণদাতা এবং বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জলবায়ু কর্মসূচির মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংস্থাটি জরুরিভিত্তিতে বিদেশি ঋণ প্রত্যাহার এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial