বিস্তারিত প্রতিবেদন
দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ এনে বিএনপির তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে রাজশাহী মহানগর বিএনপি। নগর বিএনপির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের চিঠি দেওয়ার ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে মহানগর বিএনপি দাবি করছে, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশেই এই চি ঠি দেওয়া হয়েছে।
চি ঠি পাওয়া তিন নেতা হলেন—বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের আরেক সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন (বুলবুল) এবং বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সহসম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক (মিলন)। তাঁরা তিনজনই চি ঠি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
১৭ মার্চ রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা ও সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদ এই চি ঠি তে স্বাক্ষর করেন।
কী বলা হয়েছে চিঠিতে?
শফিকুল হককে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পরও তিনি মহানগর বিএনপিকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটিকে বাদ দিয়ে নিজস্বভাবে দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি পালন করছেন। এতে সংগঠনের ঐক্য বিনষ্ট হচ্ছে এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে তাঁকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মিজানুর রহমান মিনু ও মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, মহানগর বিএনপির অধীনে থাকা কিছু ওয়ার্ডে কিছু ব্যক্তি দলীয় পদে না থেকেও মহানগর কমিটিকে উপেক্ষা করে বিতর্কিত কর্মসূচি পালন করছেন। এতে তাঁদের অংশগ্রহণ মহানগর বিএনপির শৃঙ্খলা বিনষ্ট করছে। তাই ভবিষ্যতে এসব কর্মসূচিতে অংশ না নিতে তাঁদের সতর্ক করা হয়।
মহানগর বিএনপির অবস্থান
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদ বলেন,
“দলের ভেতরের এসব জটিলতা নিরসনের জন্য চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। এরপরও তাঁরা একই ধরনের আচরণ করছেন। তাই কেন্দ্রের নির্দেশে তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান মিনু বলেন,
“একমাত্র দলের চেয়ারপারসন আমাদের এ ধরনের চি ঠি দিতে পারেন। গঠনতন্ত্রে তাই আছে। মহানগর বিএনপি না বুঝে এই চি ঠি দিয়েছে।”
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন,
“মনে হচ্ছে, ওরা মগের মুল্লুক পেয়ে গেছে। মহানগরের আহ্বায়ক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সতর্ক করার এখতিয়ার নেই।”
এটা নজিরবিহীন ঘটনা?
কেন্দ্রীয় নেতাদের মহানগর কমিটি চি ঠি দিয়ে সতর্ক করতে পারে কি না—এমন প্রশ্নে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা বলেন,
“আমরা চি ঠি দিয়েছি, ওদের কিছু বলার থাকলে কেন্দ্রীয় কমিটিকে বলুক।”
এ চি ঠি কে নজিরবিহীন বলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“নজিরবিহীন ঘটনা ঘটালে তো নজিরবিহীন চি ঠি পাবেই।”