বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ভারতের পার্লামেন্টে শেখ হাসিনা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে জানান, বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে, তবে ভারত এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ভারতের আইনপ্রণেতারা জানতে চান, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবি কতটা আইনগতভাবে বৈধ এবং এ বিষয়ে ভারত সরকারের অবস্থান কী? কেরালার সাংসদ জন বিট্টাস সংসদে প্রশ্ন করেন:
১. বাংলাদেশ কি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়েছে?
2. যদি চেয়ে থাকে, তাহলে কী কারণ দেখিয়েছে?
3. ভারত সরকার কী জবাব দিয়েছে?
উত্তরে কীর্তিবর্ধন সিং জানান, শেখ হাসিনার ভারতে প্রবেশের আগে বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধের ভিত্তিতে ঢাকা সরকার তার প্রত্যর্পণ চেয়েছে। তবে ভারত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
শেখ হাসিনার ভারত অবস্থানকালে তার বক্তব্য সরাসরি প্রচারের পর বাংলাদেশে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সাবেক সরকারের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর জেরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়।
এর আগেও গেল ডিসেম্বরে শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতকে কূটনৈতিক চিঠি পাঠায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যার প্রাপ্তি স্বীকার করেছিল ভারত। তবে তখনো কোনো আনুষ্ঠানিক জবাব মেলেনি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চিঠির আইনি ও কূটনৈতিক দিকগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে বাংলাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ধানমন্ডি ৩২-এ বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাকে “দুর্ভাগ্যজনক” বলে মন্তব্য করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সরকার দাবি করেছে, শেখ হাসিনার বক্তব্য ভারতে প্রচারিত হওয়াই সাম্প্রতিক অস্থিরতার অন্যতম কারণ। এ নিয়ে ভারতীয় উপরাষ্ট্রদূতকে তলব করে ঢাকা তাদের অসন্তোষ জানায়।
এই পরিস্থিতি বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কে কী প্রভাব ফেলে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।