সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার মধ্য চাপড়ায় মরিচ্চাপ নদীর ভয়ংকর ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে ৮০০ পরিবার। নদীর পাড়ে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা ধসে যাচ্ছে, আর প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিলছে কেবল আশ্বাস।
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, গত কয়েক দিনে নদীর তীরের প্রায় ৯০ ফুট জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে পাঁচটি বাড়ি আংশিক ধসে পড়েছে, যেকোনো সময় পুরোপুরি বিলীন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। চাপড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে, ফলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
ভাঙনের ভয়াবহতা সরেজমিনে দেখলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শন করে শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিয়ম মেনে নদীখনন না করায় এই দুর্যোগ আরও তীব্র হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক দিনের মধ্যেই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আরও বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়বে। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন সবাই, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এক ক্ষতিগ্রস্ত বলেন, “আমাদের দুর্দশার শেষ নেই, কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড আর ঠিকাদার শুধু টাকা ভাগাভাগি নিয়েই ব্যস্ত। আমরা কোথায় যাব?”
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় জানান, নদীভাঙনের বিষয়টি সত্য এবং দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন দায় এড়িয়ে বলেন, “আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নির্দেশনা পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আর মাত্র চার দিন পর অমাবস্যা, ফলে নদীর পানির উচ্চতা আরও বাড়বে। যদি জরুরি পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে আরও শত শত পরিবার সর্বস্ব হারাবে। এলাকাবাসীর একটাই দাবি— অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে এই ভয়াবহ দুর্যোগ রোধ করা হোক।