মাদারীপুরের যুবক রাকিব মহাজন উন্নত জীবনের আশায় ইতালিতে পাড়ি জমাতে গিয়ে লিবিয়ার মাফিয়াদের হাতে পড়েন। দফায় দফায় ৪২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার পরও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তিন মাস বন্দিশালায় অমানবিক নির্যাতনের পর বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে লিবিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর।
রাকিবের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে তাঁর পরিবার। স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন এবং এই ঘটনার জন্য দায়ী দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
রাকিবের মা হাসিনা বেগম বলেন, “আমাদের কাছ থেকে প্রথমে ২৭ লাখ টাকা নেওয়া হয়। এরপরও আমার ছেলেকে ইতালি পাঠায়নি। পরে আরও ১৫ লাখ টাকা আদায় করেছে দালালরা। নির্যাতনের কারণে আমার ছেলে মারা গেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।”
স্থানীয়রা জানান, “দালালদের শক্তি অনেক বেশি। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারে না। এদের কঠোর শাস্তি না হলে এমন মৃত্যু বন্ধ হবে না।”
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা জানান, “পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দালালদের অপতৎপরতা বন্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।”
মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহ্ মোহাম্মদ সজীব বলেন, “রাকিবের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন পেলে জেলা প্রশাসন দূতাবাসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।”
রাকিবের মতো আরও অনেকে উন্নত জীবনের স্বপ্নে দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ এবং মানুষের সচেতনতা ছাড়া এই প্রবণতা বন্ধ করা সম্ভব নয়।