কারাবন্দি ইমরানের নিবন্ধ টাইম ম্যাগাজিনে, পাকিস্তানজুড়ে আলোচনা
২০২৫ সালে প্রবেশের মুহূর্তে আমি এক নির্জন কারাগার থেকে দেখছি, কীভাবে পাকিস্তান কঠোর স্বৈরশাসনের কবলে পড়েছে। আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ এনে গণতন্ত্রের পক্ষে আমার সংগ্রাম স্তব্ধ করার চেষ্টা চলছে, তবে আমি পাকিস্তানের জনগণের ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষায় দৃঢ় বিশ্বাসী।
২০২৪ সাল ছিল রাজনৈতিক দমনপীড়নের এক নজিরবিহীন অধ্যায়। আমার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এবং এর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দমন অভিযান চালানো হয়েছে। সামরিক আদালতে ১০৩ জন নেতাকর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির লঙ্ঘন। এদিকে, পাকিস্তান ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সুবিধা হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে, যা অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে।
এছাড়া, দেশজুড়ে সন্ত্রাসবাদের উত্থান ঘটছে, বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তানে। সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনে ব্যস্ত থাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিচারব্যবস্থা রাজনৈতিক দমনপীড়নের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত করা হয়েছে, এবং বিরোধীদের রাষ্ট্রবিরোধী তকমা দিয়ে দমন করা হচ্ছে।
আমি সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলাম, কিন্তু সরকার শর্তসাপেক্ষে ‘রাজনৈতিক পরিসর’ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়, যা আমি প্রত্যাখ্যান করি। সেনাপ্রধানকে সংবিধান মেনে চলার আহ্বান জানাই, কারণ পাকিস্তান কেবল গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মাধ্যমেই সমৃদ্ধ হতে পারে।
আমি বিশ্বাস করি, পাকিস্তানের জনগণ এখন আগের চেয়ে বেশি সচেতন। সত্যের জয় হবেই, এবং আমরা একসঙ্গে একটি ন্যায়বিচারপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব। একইসঙ্গে, আমি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার অভিষেক উপলক্ষে অভিনন্দন জানাই এবং আশা করি, তার প্রশাসন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় অটল থাকবে।