
রাজাপুরে রাস্তা সংস্কারে অনিয়ম: পাথরের পরিবর্তে বালু, স্থানীয়দের বাধায় কাজ বন্ধ
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পুটিয়াখালি (মীরের হাট) বাজার থেকে চল্লিশ কাউনিয়া পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নকশা অনুযায়ী ছয় মিলিমিটার পাথর ও পিচঢালাই দিয়ে রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাথরের পরিবর্তে লাল বালু ব্যবহার করছিল। বিষয়টি নজরে আসার পর স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেয়।
📌 সরকারি বরাদ্দ, কিন্তু নিম্নমানের কাজ-রাস্তা সংস্কার
সরকারি তথ্যানুযায়ী, সড়কটির সংস্কারের জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু সঠিক উপকরণ ব্যবহার না করায় এলাকার জনগণ একত্র হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেয়। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, যদি নিয়ম অনুযায়ী পাথর ব্যবহার করা না হয়, তবে তারা কাজ চালু করতে দেবে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এটি জনগণের টাকায় নির্মিত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। তাই নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে সরকারি অর্থের অপচয় বরদাশত করা হবে না।
🛑 ঠিকাদারের ব্যাখ্যা
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোহাম্মদ বিল্ডার্সের মালিক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন,
“পাথর না থাকায় স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর আমরা পাথর এনে কাজ চালু করেছি।”
তবে স্থানীয়দের দাবি, এটি কেবল অজুহাত। শুরু থেকেই নিম্নমানের কাজের চেষ্টা করা হচ্ছিল, তাই তারা বাধা দিয়েছে।

📢 প্রকৌশলীদের মতামত-রাস্তা সংস্কার
স্থানীয়দের প্রতিবাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ঝালকাঠির উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মজিবুর রহমান বলেন,
“ঠিকাদার অনিয়ম করায় স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় করে নিম্নমানের কাজ মেনে নেওয়া যাবে না।”
তবে ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার শরীফ খান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন এবং পরবর্তীতে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

⏳ পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
এলাকাবাসীর কড়া অবস্থানের ফলে বর্তমানে রাস্তা সংস্কারের কাজ বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নেবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে স্থানীয়রা দাবি জানাচ্ছেন, সঠিক উপকরণ ছাড়া তারা কোনোভাবেই এই প্রকল্পের কাজ চলতে দেবেন না।
এই ঘটনাটি সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার গুরুত্বকে আবারও সামনে এনেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তবে ভবিষ্যতেও এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের প্রতিরোধ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
🔗 আপনার মতামত কী? এই বিষয়ে আরও আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন!