বাগেরহাটের ৩ ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক পর্যটন স্থান: ষাটগম্বুজ মসজিদ, সুন্দরবনের অংশ ও খান জাহান আলীর মাজার
বাগেরহাট বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও পর্যটনসমৃদ্ধ জেলা। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ ষাটগম্বুজ মসজিদ, সুন্দরবনের অংশ ও খান জাহান আলীর মাজার। ইতিহাস, প্রকৃতি ও আধ্যাত্মিকতার অপূর্ব সংমিশ্রণ বাগেরহাটকে পর্যটকদের জন্য বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
১. ষাটগম্বুজ মসজিদ: বাংলার ঐতিহাসিক নিদর্শন
বাগেরহাটের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা ষাটগম্বুজ মসজিদ, যা ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য।
- ১৫ শতকে খান জাহান আলী এটি নির্মাণ করেন, যা বাংলার সুলতানি স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন।
- মসজিদটির আসল গম্বুজ সংখ্যা ৭৭টি, তবে প্রধান ৬০টি গম্বুজের জন্য এটি ‘ষাটগম্বুজ’ নামে পরিচিত।
- দৃষ্টিনন্দন লাল ইটের স্থাপত্য ও প্রশস্ত প্রাঙ্গণ এটি ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য করেছে।
২. সুন্দরবনের অংশ: প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য
বাগেরহাট জেলার মধ্যে সুন্দরবনের একটি অংশ রয়েছে, যা বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে পরিচিত।
- এটি বাঘ, হরিণ, কুমিরসহ বহু বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল।
- নৌকা বা স্পিডবোটে চড়ে বনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, যা পর্যটকদের জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
- প্রকৃতিপ্রেমী ও ফটোগ্রাফারদের জন্য এটি আদর্শ স্থান।
৩. খান জাহান আলীর মাজার: আধ্যাত্মিক ও ঐতিহাসিক কেন্দ্র
বাগেরহাটের প্রতিষ্ঠাতা খান জাহান আলীর মাজার এখানকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থান।
- এটি খান জাহান আলীর কবরস্থান, যা প্রতিদিন অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।
- পাশেই রয়েছে শুভ্রা ও দীঘি, যেখানে বিশাল আকৃতির মিঠা পানির কুমির দেখা যায়।
- প্রতি বছর এখানে ওরস অনুষ্ঠিত হয়, যা অসংখ্য মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
শেষ কথা
বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ, সুন্দরবনের অংশ ও খান জাহান আলীর মাজার শুধু পর্যটন স্থান নয়, বরং ইতিহাস, ধর্মীয় ঐতিহ্য ও প্রকৃতির এক অনন্য সমন্বয়। যারা বাংলার অতীত ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একসঙ্গে উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য বাগেরহাট অবশ্যই ভ্রমণের উপযুক্ত স্থান।