“শান্তি আলোচনা থেমে যেতে পারে? ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি | রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন মোড় নিচ্ছে”
আজকের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু—রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার শান্তি আলোচনা।
আর সেই আলোচনায় নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শুক্রবার, ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন—
“যদি মস্কো ও কিয়েভ শান্তি প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আর কোনো মধ্যস্থতা করবে না।”
তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন,
“মানুষ মরছে, আর আমরা সেটা থামাতে চাই। কিন্তু যদি কেউ বাধা দেয়, তাহলে আমরা শুধু বলবো—তোমরা বোকা, তোমরা গর্দভ, এবং আমরা চলে যাবো।”
এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছিলেন—
“আমরা সপ্তাহ বা মাস ধরে এই আলোচনা চালিয়ে যাবো না। যদি অগ্রগতির স্পষ্ট লক্ষণ না থাকে, আমরা বেরিয়ে আসবো।”
অন্যদিকে, রাশিয়া ইউক্রেনে তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
খারকিভ ও সুমিতে শুক্রবারের হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত দু’জন, আহত হয়েছেন একশ’র বেশি মানুষ।
২০২২ সালে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ ধীরে ধীরে পূর্ব ইউক্রেনের দিকে রাশিয়ার অগ্রযাত্রা নিয়ে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও শান্তি আলোচনা বা যুদ্ধবিরতির জন্য কিছু কঠিন শর্ত দিয়েছেন।
তবে ট্রাম্প মনে করেন,
“আমার দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়া উচিত ছিলো।”
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন,
“আলোচনা কঠিন, তবে রাশিয়া শান্তিপূর্ণ সমাধানে আগ্রহী। আমরা নিজেদের স্বার্থ নিশ্চিত করেই শান্তি চাই।”
🇮🇹 ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জ মেলোনির সঙ্গে রোমে সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।
তিনি জানান—
“আমরা আশাবাদী, এই নিষ্ঠুর যুদ্ধের একটি অবসান সম্ভব। কিছু অগ্রগতি ইতোমধ্যে হয়েছে।”
তবে এই আলোচনা ঘিরে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে।
আর তা হলো—খনিজ সম্পদ নিয়ে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্ভাব্য একটি চুক্তি।
এই চুক্তি শুধু খনিজ নয়, জ্বালানি অবকাঠামো ও তেল-গ্যাস পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।
সম্প্রতি দুই দেশ একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে।
ইউক্রেন চায়, ২৬ এপ্রিলের মধ্যে এই চুক্তি চূড়ান্ত হোক।
জেলেনস্কি আশা করছেন, এর মাধ্যমে দেশ পুনর্গঠনে সহায়তা পাবেন এবং সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তাও।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে নিশ্চিত নয়।
হোয়াইট হাউজের মতে,
“আমেরিকান বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিই রাশিয়াকে নতুন হামলা থেকে বিরত রাখবে।”
ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিদেঙ্কো এক্সে পোস্ট করে জানান,
“চুক্তি এখনো পূর্ণাঙ্গ নয়, তবে ইতোমধ্যে অগ্রগতি হয়েছে। এটাই আশার আলো।”
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টও বলেছেন,
“চুক্তির ভিত্তি হলো পূর্বে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো। আমরা বিস্তারিত নিয়ে কাজ করছি।”
ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন—আগামী বৃহস্পতিবার-ই হয়তো খনিজ চুক্তিটি স্বাক্ষর হতে পারে।
তবে ইউক্রেনের পার্লামেন্টারি কমিটির চেয়ারম্যান মনে করেন,
“যে কোনো চুক্তিই হোক না কেন, সেটি অনুমোদনের জন্য ইউক্রেনের পার্লামেন্টেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।”
🤝 প্যারিসে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা, মার্কো রুবিও এবং ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
তারা বলছেন—
“একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধবিরতি, বহুজাতিক নিরাপত্তা বাহিনী এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়েই আমরা আলোচনা করেছি।”
📌 প্রশ্ন একটাই—
আলোচনার গতি না বাড়লে কি সত্যিই যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে যাবে?
আর তাতে কি যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হবে?