ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের জবাবে কে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে এক প্রবল ঝড় তুলেছে। চীনের উত্থান ঠেকাতে এবং দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। তার মতে, এতদিন যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিকভাবে ছিঁড়ে খেয়েছে বাকি বিশ্ব—এখন সময় হয়েছে হিসাব চুকানোর।
২ এপ্রিল, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। ট্রাম্প এই দিনটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিবস’ বলে আখ্যা দেন। তবে এই শুল্কযুদ্ধের জবাবে থেমে থাকেনি কেউই। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক—বিশ্বের বড় দেশগুলো কী পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কড়া হুঁশিয়ারি
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেন একে ‘বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় আঘাত’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, পরিবহন, এমনকি ওষুধের দামও বাড়বে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে নিম্ন আয়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। মার্চে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক বসালে, ইইউও জবাব দেয়। নতুন পাল্টা শুল্ক এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর হচ্ছে।
উরসুলা জানান, “আমরা আলোচনায় প্রস্তুত, কিন্তু প্রয়োজনে পাল্টা জবাব দিতেও প্রস্তুত।”
আজ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপের রূপরেখা দিতে পারেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
চীনের ‘ইটের বদলে পাটকেল’ নীতি
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের পাল্টা জবাবে চীনও সরব। চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে—১০ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর ৩৪% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে।
এছাড়াও চীন নিয়ন্ত্রণে আনবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামালের রপ্তানি।
চীন ইতিমধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (WTO) যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগও দাখিল করেছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, তারা ১৬টি মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছে। ফলে এসব কোম্পানি চীনের বাজার ও প্রযুক্তিতে প্রবেশে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
ইলন মাস্কের আহ্বান
মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ইলন মাস্ক শুল্কযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
ইতালির ফ্লোরেন্সে আয়োজিত এক ভিডিও সম্মেলনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের মধ্যে শুল্কমুক্ত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের আহ্বান জানান।
তার মতে, “বাণিজ্যে বাধা না থাকাই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি।”
উপসংহার
বিশ্ব এখন এক অদৃশ্য অর্থনৈতিক লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কেউ রণাঙ্গনে যুদ্ধ করছে, কেউ কূটনৈতিক দরজায় কড়া নাড়ছে। ট্রাম্পের ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধনীতি’ বিশ্বকে নতুন এক বাণিজ্যিক বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।
2 thoughts on “ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের জবাবে কে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?”