হৃদয়ের রক্তক্ষরণ থেকে ক্ষোভের বিস্ফোরণ — পাকিস্তানকে প্রকাশ্যে আঘাত করলেন অক্ষয় কুমার
মঞ্চভর্তি দর্শক। চোখেমুখে আবেগ। এক সিনেমা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও যেন শেষ হয়নি অনুভূতির ঝড়। ঠিক সেই মুহূর্তেই অভিনেতা অক্ষয় কুমার ভাঙলেন নীরবতা। ভেতরে জমে থাকা ক্ষোভকে আর আটকে রাখতে পারলেন না তিনি। দেশের প্রতি ভালোবাসা আর ব্যথা মিশে প্রকাশ্যে গর্জে উঠলেন— লক্ষ্য একটাই, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান।
সেদিন প্রেক্ষাগৃহে চলছিল দেশাত্মবোধক ছবি ‘কেসরী চ্যাপ্টার ২’ এর বিশেষ প্রদর্শনী। সিনেমা শেষে দর্শকদের সঙ্গে কথা বলতে উঠেছিলেন অক্ষয়। কথায় কথায় চলে আসে পেহেলগাম হামলার প্রসঙ্গ। তার কণ্ঠে তখন আর কোনো তারকা-সুলভ ভদ্রতা ছিল না, ছিল শুধু একজন দেশের সন্তানের ক্ষুব্ধ আহ্বান।
“দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের মনে আবার সেই ক্ষোভ ফিরে এসেছে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, আমি কাদের কথা বলছি।” — বললেন তিনি, গলা ভারী হয়ে উঠেছিল।
তারপর নিজের সিনেমার কথা টেনে আনলেন। বললেন, “ছবিতে যেভাবে শত্রুদের উদ্দেশে ইংরেজির ‘F’ দিয়ে শুরু হওয়া শব্দ ব্যবহার করেছি, আজ ঠিক সেভাবেই বলতে চাই তাদের জন্য।”
মঞ্চে দাঁড়িয়ে থাকা অক্ষয় মাইক ঘুরিয়ে দিলেন দর্শকদের দিকে। মুহূর্তের মধ্যে সমবেত কণ্ঠে ধ্বনিত হলো প্রতিবাদ— “পাকিস্তান তোমাকে…” বাকিটা ছিল কষ্ট আর রাগে ভরা অসমাপ্ত শব্দমালা।
মনে হচ্ছিল, গোটা হলঘর যেন একসঙ্গে বুকের ব্যথা উগরে দিচ্ছে।
একজন শিল্পীর ক্ষোভ, একটি জাতির অনুভূতি
পেহেলগাম হামলার পরদিনই সামাজিক মাধ্যমে নিজের শোক প্রকাশ করেছিলেন অক্ষয় কুমার। লিখেছিলেন,
“পেহেলগামে পর্যটকদের উপর নির্মম হামলার খবর শুনে আমি স্তম্ভিত। নিরীহ মানুষদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিহত পরিবারগুলোর জন্য প্রার্থনা করছি।“
কিন্তু হয়তো এতেই থেমে থাকেনি তার ভেতরের ঝড়। সেই ঝড়ই যেন সেদিন প্রকাশ পেল একটি সিনেমার মঞ্চ থেকে — যা ছিল কেবলই একক কোনো ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া নয়, বরং একটি জাতির হৃদয়ের রক্তক্ষরণের প্রতিধ্বনি।
বিতর্কের কেন্দ্রে অক্ষয়
অক্ষয়ের প্রকাশ্য মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্কও। কেউ বলছেন, একজন তারকার কাছ থেকে এমন খোলামেলা ক্ষোভ প্রকাশ নতুন এক দৃষ্টান্ত। আবার কেউ মনে করছেন, দায়িত্বশীল ভাষা বজায় রাখাই উচিত ছিল। কিন্তু সমালোচনা যাই হোক, একথা অস্বীকার করার উপায় নেই—
সেদিন অক্ষয় ছিলেন কেবল একজন অভিনেতা নন, ছিলেন কোটি কোটি মানুষের অব্যক্ত ব্যথার একজন প্রেরণাদাতা।