Bangladeshi Trending Topic
স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ
ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাড়ে ৫০০ কিলোমিটার ওপরে পৃথিবীর কক্ষপথে স্টারলিংকের প্রায় ৭ হাজার স্যাটেলাইট কাজ করছে। ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকি দুর্গম এলাকাতেও, সরাসরি ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হচ্ছে। স্টারলিংক কিট বা অ্যান্টেনার মাধ্যমে গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ২২০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট সুবিধা পেতে পারেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে ফোনালাপ করেন এবং সর্বশেষ ১৯ ফেব্রুয়ারি পাঠানো এক চিঠিতে আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশে এই সেবা চালুর প্রস্তাব দেন। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ইতোমধ্যে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবার জন্য একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে। নীতিমালায় লাইসেন্স ফি, রাজস্ব ভাগাভাগির হার, নিরাপত্তা সংস্থার শর্তাবলী, আর্থ স্টেশন স্থাপন, ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের নিয়মসহ বেশ কিছু বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিটিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ে একটি গাইডলাইন পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় সেটি পর্যবেক্ষণ করে মতামত চেয়েছে, যা এই সপ্তাহেই পাঠানো হবে। সরকারের অনুমোদন পেলে স্টারলিংককে লাইসেন্স দেওয়া সম্ভব হবে।
স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা পেতে গ্রাহকদের একটি বিশেষ কিট কিনতে হবে, যার মূল্য ৪১,৮৮০ টাকা থেকে ৭১,৮৮০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া আবাসিক গ্রাহকদের মাসিক ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১২০ ডলার বা প্রায় ১৪,৫০০ টাকা।
তুলনামূলকভাবে,:
বর্তমানে বাংলাদেশে মাত্র ৫০০ টাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যায়। ফলে স্টারলিংকের উচ্চমূল্যের কারণে এটি দেশীয় ইন্টারনেট সেবাদাতাদের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (আইআইজিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম জানিয়েছেন, স্থানীয় সেবাদাতাদের মতো স্টারলিংককেও সমপরিমাণ ভ্যাট দিতে হবে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনুরোধে সার্ভার মেইনটেন করতে হবে। এই নীতিগুলো না মানলে বাজারে অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
বর্তমানে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট পরিষেবা দিচ্ছে। বাংলাদেশেও এটি চালু হলে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে, বিশেষ করে দুর্গম অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে উচ্চমূল্য এবং স্থানীয় ইন্টারনেট সেবাদাতাদের প্রতিযোগিতার বিষয়টি কীভাবে সমাধান করা হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
